সরকার আসে ,সরকার যায়
তসলিমা তুমি কোথায় ?
গতকাল কলকাতা বইমেলায় আবার প্রমানিত হল, বাঙালি আজও 'আত্মঘাতী'। জয়পুর সাহিত্য উতসবে এবছর যখন সলমান রূশদির video conference বাতিল নিয়ে সারা বিশ্বে ভারত সরকারের নিন্দা হচ্ছে, প্রতিবাদ , তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে তাত্ত্বিক মহলে, আমরা বাঙালিরা তখন মুখ টিপে হাসছিলাম, আর কাগজের পাতা উলটে অন্য খবরে মন দিচ্ছিলাম। আর গতকাল আমাদের অতিপ্রিয় কলকাতা বইমেলায় লেখক তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনীর ৭ম খন্ড 'নির্বাসন' এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশের অনুষ্ঠান গিল্ড কর্ত্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে বাতিল করে দিল, তখনও আমরা বিস্মিত, হতবাক হলাম, আর দেখলাম 'ইস', আর 'চুক চুক' ছাড়া মুখ দিয়ে আর কিছু বেরোল না! আমাদের চামড়া আজ এতই মোটা হয়ে গিয়েছে যে এর চেয়ে বেশি কিছু যে করতে পারি , তা ভাবতেই কেমন কেমন লাগে ।
কলকাতা বইমেলার কর্তারা এই হীন আচরণের দ্বারা এরাজ্যের ট্রাডিশনাল কাপুরুষতা, ভীরুতা ও মৌলবাদিদের তাঁবেদারির লজ্জাকর মুকুটে আরো একটি পালক যুক্ত করল। ধন্যবাদ ।।
২০০৭ সালে cpm র কালো রাজনীতি শুধুমাত্র মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে তসলিমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল কলকাতা থেকে, আজ ২০১২ এর পরিবর্তিত tmc সরকারও সেই একই পথে হেঁটে প্রমান করল তারা উভয়েই একই মুদ্রার দুইপিঠ । এ রাজ্যে আর যা কিছুরই পরিবর্তন হোক, তসলিমার ঘুটি আজও সাদা-কালো বোর্ডের বাইরে। তাঁর লেখনির সত্যতা যে মৌলবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক প্রশাসনের অম্বলের কারন এটা ধ্রুব সত্য। বারেবারে তা প্রমান করেছে এ রাজ্যের চালকগন ।
গতকাল যেভাবে মৌলবাদের উদ্ধত হুমকির ভয়ে অনুষ্ঠান বাতিল করা হল তাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনের প্রহসন সহজেই চোখে পড়ে।যে স্বচ্ছ-সাহসী প্রশাসনের দাবীতে আমরা লাল পার্টিকে হারিয়ে সবুজ পার্টিকে গদিতে বসালাম, তারা পূর্বসুরির মতই সন্ধ্যেবেলা দাবী তুলল, 'নির্বাসন' ব্যান করার জন্য। মমতা পড়েছেন? প্রশাসকদের একজনও পড়েছেন বইটি? কি লেখা আছে তা জানে ক'জন? একটি সামান্য বই যদি একটি ইউনিভার্সাল ধর্মকে প্রশ্নের সামনে ফেলে দেয়, তবে সেই ধর্মের স্বীকৃতি, যোগ্যতা ও সমাজে প্রতিষ্ঠা নিয়ে '?' চিহ্ন থেকেই যায় না কি?
গিল্ড কর্ত্তৃপক্ষের বালখিল্য আচরণের যখন ক্ষিপ্ত পাঠকমহল কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে, হাতে হাত ধরে প্রতিবাদে সামিল হল, তখন কোথায় গেল বুদ্ধিজীবি সমাজ, যারা বর্তমান সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত? জয়পুরে রূশদি ইস্যু নিয়ে তারা 'বাইট' দিতে এগিয়ে আসেন, আর নিজের রাজ্যে, নিজের মাতৃভাষার লেখকের লেখা প্রকাশের অনুষ্ঠান অন্যায় ভাবে বাতিল হলে তারা সবাই ভাবমূর্তি রক্ষায় পিঠ বাঁচাতে গর্তে লুকালেন ! ধিক তবে সেই তাবত প্রগতিশীল সুশীল সমাজকে !২০০৭ তারা cpm প্রভাবে ঠিক যেমন যে স্থানে ছিলেন, আজ ২০১২ tmc যুগেও সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে।
নতুন সরকার কবর থেকে তুলে এনে সাহিত্যজগতের নামী-দামী ব্যক্তিত্ত্বদের বিভিন্ন গালভরা পুরস্কারে, সন্মানে ভুষিত করেছে কিছুদিন আগেই।রবীন্দ্রসংগীত শুনিয়ে, নজরুলের নামে একাডেমি বানিয়ে নিজেদের প্রগতিশীল, রুচিশীল সরকার বলে, যারা সাংস্কৃতিক প্রশাসক বলে দাবী করে, তারাই আজ আর একজন লেখকের কন্ঠরোধের ঘৃন্য মৌলবাদি চক্রান্তের কাছে মাথা নত করে ! হায় রে, এ কোথায় বাস করি আমরা? ধর্মঘটের রাজনীতি, ব্যানের দাবী নাকি ব্রাত্য এ সরকারে, অথচ গতকাল সরকারের মুখপত্র টিভি চ্যানেল সরব হল 'নির্বাসন' ব্যানের দাবীতে ! এত দ্বিচারিতা !ধিক, ধিক, ধিক !!
আরো আছে, সব ব্যাপারে CPM এর ভূত দেখা মা-মাটি-মানুষের সরকার গতকাল সতস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদে সামিল হওয়া পাঠকসমাজ ও ভক্তকূল কেও দাগিয়ে দিল ওই ভূতেরই চামচে বলে! (মুকুল রায় বলেন, রাজ্য সরকার চায় না অশান্তি...cpm ই এসব করাচ্ছে।...) এসব বলতে শুধু যে মোল্লাদের হুমকি বোঝায় তাই নয়, তার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদও বোঝায়। এত অদ্ভুত সমাজ বোধহয় হিরক রাজ্যেও ছিল না যেখানে 'জানার কোনও শেষ নাই/ জানার চেষ্টা বৃথা তাই' বলে রাজা সকলকে টুপি পরাত। এখানে সরকার secularism এর মূখোশ পরে মোল্লাদের ইফতার পার্টি attend করে। ইনশাল্লা, আশির্বাদ আর দোয়া খুব সতর্কভাবে উচ্চারিত হয় আমজনতা ও সংখ্যালঘুদের আলাদা আলাদা টুপি পরানোর জন্য । এখানে শুধু লেখকই নয়, তাঁর পাঠক ও ভক্তকূলও হয় political victims ! শুধু লেখার অধিকারই কাড়া হয়না, পড়ার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়।
ভাষা দিবসের ২০দিন আগে মাতৃভাষায় মতপ্রকাশের অধিকার খুব নির্লজ্জভাবে কেড়ে নেওয়া হল, কিছু উন্মাদ দাঙ্গাবাজ দাড়ি-টুপিওয়ালা দের তুষ্ট করার জন্য । এর পরও কি তসলিমাকে প্রতিক্রিয়া দিতে হবে, নাকি আমরা বিবেক কে একবার প্রশ্ন করব?
তসলিমা তুমি কোথায় ?
গতকাল কলকাতা বইমেলায় আবার প্রমানিত হল, বাঙালি আজও 'আত্মঘাতী'। জয়পুর সাহিত্য উতসবে এবছর যখন সলমান রূশদির video conference বাতিল নিয়ে সারা বিশ্বে ভারত সরকারের নিন্দা হচ্ছে, প্রতিবাদ , তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে তাত্ত্বিক মহলে, আমরা বাঙালিরা তখন মুখ টিপে হাসছিলাম, আর কাগজের পাতা উলটে অন্য খবরে মন দিচ্ছিলাম। আর গতকাল আমাদের অতিপ্রিয় কলকাতা বইমেলায় লেখক তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনীর ৭ম খন্ড 'নির্বাসন' এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশের অনুষ্ঠান গিল্ড কর্ত্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে বাতিল করে দিল, তখনও আমরা বিস্মিত, হতবাক হলাম, আর দেখলাম 'ইস', আর 'চুক চুক' ছাড়া মুখ দিয়ে আর কিছু বেরোল না! আমাদের চামড়া আজ এতই মোটা হয়ে গিয়েছে যে এর চেয়ে বেশি কিছু যে করতে পারি , তা ভাবতেই কেমন কেমন লাগে ।
কলকাতা বইমেলার কর্তারা এই হীন আচরণের দ্বারা এরাজ্যের ট্রাডিশনাল কাপুরুষতা, ভীরুতা ও মৌলবাদিদের তাঁবেদারির লজ্জাকর মুকুটে আরো একটি পালক যুক্ত করল। ধন্যবাদ ।।
২০০৭ সালে cpm র কালো রাজনীতি শুধুমাত্র মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে তসলিমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল কলকাতা থেকে, আজ ২০১২ এর পরিবর্তিত tmc সরকারও সেই একই পথে হেঁটে প্রমান করল তারা উভয়েই একই মুদ্রার দুইপিঠ । এ রাজ্যে আর যা কিছুরই পরিবর্তন হোক, তসলিমার ঘুটি আজও সাদা-কালো বোর্ডের বাইরে। তাঁর লেখনির সত্যতা যে মৌলবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক প্রশাসনের অম্বলের কারন এটা ধ্রুব সত্য। বারেবারে তা প্রমান করেছে এ রাজ্যের চালকগন ।
গতকাল যেভাবে মৌলবাদের উদ্ধত হুমকির ভয়ে অনুষ্ঠান বাতিল করা হল তাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনের প্রহসন সহজেই চোখে পড়ে।যে স্বচ্ছ-সাহসী প্রশাসনের দাবীতে আমরা লাল পার্টিকে হারিয়ে সবুজ পার্টিকে গদিতে বসালাম, তারা পূর্বসুরির মতই সন্ধ্যেবেলা দাবী তুলল, 'নির্বাসন' ব্যান করার জন্য। মমতা পড়েছেন? প্রশাসকদের একজনও পড়েছেন বইটি? কি লেখা আছে তা জানে ক'জন? একটি সামান্য বই যদি একটি ইউনিভার্সাল ধর্মকে প্রশ্নের সামনে ফেলে দেয়, তবে সেই ধর্মের স্বীকৃতি, যোগ্যতা ও সমাজে প্রতিষ্ঠা নিয়ে '?' চিহ্ন থেকেই যায় না কি?
গিল্ড কর্ত্তৃপক্ষের বালখিল্য আচরণের যখন ক্ষিপ্ত পাঠকমহল কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে, হাতে হাত ধরে প্রতিবাদে সামিল হল, তখন কোথায় গেল বুদ্ধিজীবি সমাজ, যারা বর্তমান সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত? জয়পুরে রূশদি ইস্যু নিয়ে তারা 'বাইট' দিতে এগিয়ে আসেন, আর নিজের রাজ্যে, নিজের মাতৃভাষার লেখকের লেখা প্রকাশের অনুষ্ঠান অন্যায় ভাবে বাতিল হলে তারা সবাই ভাবমূর্তি রক্ষায় পিঠ বাঁচাতে গর্তে লুকালেন ! ধিক তবে সেই তাবত প্রগতিশীল সুশীল সমাজকে !২০০৭ তারা cpm প্রভাবে ঠিক যেমন যে স্থানে ছিলেন, আজ ২০১২ tmc যুগেও সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে।
নতুন সরকার কবর থেকে তুলে এনে সাহিত্যজগতের নামী-দামী ব্যক্তিত্ত্বদের বিভিন্ন গালভরা পুরস্কারে, সন্মানে ভুষিত করেছে কিছুদিন আগেই।রবীন্দ্রসংগীত শুনিয়ে, নজরুলের নামে একাডেমি বানিয়ে নিজেদের প্রগতিশীল, রুচিশীল সরকার বলে, যারা সাংস্কৃতিক প্রশাসক বলে দাবী করে, তারাই আজ আর একজন লেখকের কন্ঠরোধের ঘৃন্য মৌলবাদি চক্রান্তের কাছে মাথা নত করে ! হায় রে, এ কোথায় বাস করি আমরা? ধর্মঘটের রাজনীতি, ব্যানের দাবী নাকি ব্রাত্য এ সরকারে, অথচ গতকাল সরকারের মুখপত্র টিভি চ্যানেল সরব হল 'নির্বাসন' ব্যানের দাবীতে ! এত দ্বিচারিতা !ধিক, ধিক, ধিক !!
আরো আছে, সব ব্যাপারে CPM এর ভূত দেখা মা-মাটি-মানুষের সরকার গতকাল সতস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদে সামিল হওয়া পাঠকসমাজ ও ভক্তকূল কেও দাগিয়ে দিল ওই ভূতেরই চামচে বলে! (মুকুল রায় বলেন, রাজ্য সরকার চায় না অশান্তি...cpm ই এসব করাচ্ছে।...) এসব বলতে শুধু যে মোল্লাদের হুমকি বোঝায় তাই নয়, তার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদও বোঝায়। এত অদ্ভুত সমাজ বোধহয় হিরক রাজ্যেও ছিল না যেখানে 'জানার কোনও শেষ নাই/ জানার চেষ্টা বৃথা তাই' বলে রাজা সকলকে টুপি পরাত। এখানে সরকার secularism এর মূখোশ পরে মোল্লাদের ইফতার পার্টি attend করে। ইনশাল্লা, আশির্বাদ আর দোয়া খুব সতর্কভাবে উচ্চারিত হয় আমজনতা ও সংখ্যালঘুদের আলাদা আলাদা টুপি পরানোর জন্য । এখানে শুধু লেখকই নয়, তাঁর পাঠক ও ভক্তকূলও হয় political victims ! শুধু লেখার অধিকারই কাড়া হয়না, পড়ার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়।
ভাষা দিবসের ২০দিন আগে মাতৃভাষায় মতপ্রকাশের অধিকার খুব নির্লজ্জভাবে কেড়ে নেওয়া হল, কিছু উন্মাদ দাঙ্গাবাজ দাড়ি-টুপিওয়ালা দের তুষ্ট করার জন্য । এর পরও কি তসলিমাকে প্রতিক্রিয়া দিতে হবে, নাকি আমরা বিবেক কে একবার প্রশ্ন করব?