My Attitude!

My Attitude!

Pages

My Blog List

Meet and Recognise-- I, Me and MySelf...!

@@@ ~WELCOME TO MY CYBER WORLD~ @@@











~~~ I am My Own Music, People Want to Get in Touch With Me... Play Your Lyrics By My Rhythm ~~~



Thursday, May 14, 2015

ইসলামিক সন্ত্রাসে শুধু মানুষ নয় , বিপন্ন সভ্যতার ইতিহাসও .

ধর্মের ক্লেদ আর মিথ্যে বেহেস্তিয় সুখের জিগির তুলে একের পর এক ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে যে জাতি তারা মুসলমান বা আরো স্পষ্ট করলে ইসলামীয় সন্ত্রাসী । মানুষ মারা, মুন্ড নিয়ে ফুটবল খেলা জাত আজ এই গলা কাটা বিনোদনে ক্লান্ত হয়তো । তাই এবার তারা ইতিহাসকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর ।

জওহরলাল নেহেরু তাঁর Discovery of India বইয়ে লিখেছিলেন , "ভারতে ও তার বাইরে এমন স্থান খুব কমই আছে যেখানে এর পুরাতন স্মৃতিসৌধ , ভারতীয় সংস্কৃতি বিশেষত বৌদ্ধ যুগের এত চিহ্ন দেখা যায় - যেমন মেলে আফগানিস্থানে ।" 
সৈয়দ মুজতবা আলী লিখেছিলেন " যেদিন বৃহত্তর দৃষ্টি দিয়ে দেখতে শিখব সেদিন জানব যে ভারতবর্ষ ও আফগানিস্থানকে পৃথক করে দেখা পরবর্তি যুগের কুসংস্কার ।"

যে ভারতে মিশে আছে কনিষ্ক-এর বুদ্ধ স্তুপ , আমির খসরু- রুমি , বাবর, গান্ধারী এরা সবাই বিনাকাঁটা তারেই এসেছিলেন সে দেশে ।
যে কনিষ্ক ভারত শাসন করেছিলেন সেই একই জন আফগানিস্তানেও করেছিলেন । বাবর যেমন ওই দেশের তেমনি ভারতেরও । ইতিহাসের যৎসামান্য সন্মানপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে একজন গান্ধারীও নাকি এসেছিলেন হিন্দুকুশ পর্বত পেরিয়েই ।
প্রথম শতাব্দীতে বৃহৎ ভারতের বহু ধর্মপ্রচারক চীন- তীব্বত- মধ্য এশিয়া হয়ে আগফানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বতমালায় যে পথে বেনিয়ারা পশরা সাজিয়ে চীন থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত বানিজ্য করতে যেতেন, সেই ঐতিহাসিক পথের ধারে বৌদ্ধ সাধুরা পাথর কেটে তৈরী করেছিলেন অসংখ্য গুম্ফা , পরে যেগুলি হয়ে উঠেছিল,  ধর্ম- দর্শন-শিল্পকলার চর্চাকেন্দ্র ।
বৌদ্ধ মঠ- গুম্ফা - শিলালীপি - মুদ্রা তথা অসংখ্য পুরাকীর্তির আকরভূমি হল এই আফগানিস্তান । কুষান আমলে বামিয়ানে তৈরী 'বামিয়ান বৌদ্ধমূর্তি' ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম বৌদ্ধ মূর্তি । যা অন্যতম World Heritage site হিসেবে ঘোষনা করেছিল UNESCO .
এছাড়াও আছে ...
টাইগ্রিস নদীর তীরে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন ছিল আসিরীয় সভ্যতা । মানুষের সভ্যতার উষাকাল থেকে উজ্জ্বল হয়ে ছিল আসিরিয় সভ্যতা । আসিরিয়ার রাজধানী নিমরুদের ধ্বংস স্তুপ থেকে বহু চেষ্টায় পুরাতাত্ত্বিকরা উদ্ধার করেছিলেন সেই সময় কালের মূর্তি- ভাস্কর্য- লিপি । যা মানুষের সুপ্রাচীন ইতিহাসের নিরব দলিল ।

সেইসব সভ্যতার আকরভূমি , মানুষের সুপ্রাচীন ইতিহাসের দলিলগুলির ধারক দেশগুলি আজ জ্বলছে । ধর্মের অন্ধকূপের আগুনে জ্বলতে জ্বলতে একটু একটু করে ছাই হয়ে মিশে যাচ্ছে আইসিস - তালিবান অধ্যুসিত আজকের ধুসর আকাশে ।
যে আফগানিস্থানকে ছোটবেলায় চিনেছিলাম রবী ঠাকুরের 'কাবুলিওয়ালা'-র হাত ধরে ,সেই মরুভূমির আখরোট -বাদাম-পেস্তার গন্ধ মাখা দেশ আজ বারুদের গন্ধ আর মানুষের রক্তের গন্ধে দূষিত । টাইগ্রিস -ব্যবিলন-মসুল- আসিরীয়া -নিমরুদ এসব স্থানে এখন রাত্রীচারী জংগিদের অবাধ স্বাধীনতা ।

গজনীর সুলতান মামুদ যিনি সতেরোবার ভারত আক্রমণ করে সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করে 'আইকনক্লাস্ট ' উপাধি পেয়ে কুখ্যাত হয়েছিলেন মানব সভ্যতার ইতিহাসে, তিনিও বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তির গায়ে আঁচড় কাটার চেষ্টা করেন নি । কিন্তু তলিবানরা, পৃথিবীর অহংকার সেই সুউচ্চ মূর্তিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে প্রমান করেছিল জেহাদের সঙ্গে সভ্যতা- সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নেই । একবিংশ  শতকে তাদের যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবে উঠে এসেছে আইসিস  (ইসলামিক স্টেট ) ।

টাইগ্রিসের তীরে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার নিদর্শনগুলি ধ্বংস করেছে । মাত্র কয়েক ঘণ্টার হাতুড়ি-শাবল -ছেনির আঘাতে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে নিমরুদের অমূল্য সব স্থাপত্য, মূর্তি , লিপি । পৃথিবী থেকে মুছে ফেলেছে খ্রীষ্টের জন্মের তেরোশো বছর আগের আসিরীয় নিদর্শন । হাতুরির ঘায়ে ধুলিস্যাৎ হয়েছে মসুলের জাদুঘর ।
ফেসবুক পেজে ইরাকের পর্যটন ও স্থাপত্য - প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্রকের আর্তনাদ ছাড়া আর কি বা অবশিষ্ট আছে ?

নিনেভের জাদুঘর ধ্বংসের ভিডিও আইএস ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে - প্রচার শাখা আল-হায়াত
আমরা দেখেছি হাজার হাজার বছরের ইতিহাস মূহুর্তে মাটিতে মিশছে হাতুড়ির আঘাতে । জঙ্গিদের বার্তা " পৈত্তলিকতা মুছতে এই হামলা !"
রাষ্ট্র সঙ্ঘ তীব্র নিন্দা করে বার্তা দিয়েছে , কড়া সমালোচনা করেছে আরো কিছু হিউম্যানিস্ট অরগ্যানাইজেশন । কিন্তু এতে থামে নি ওদের ধ্বংস যজ্ঞ ।

কত সব মূর্তি , ভাস্কর্য, যেগুলি তৈরী করতে মানুষের চেষ্টার ইতিহাস ছিল কয়েক শতাব্দী জুড়ে , সেগুলি মাটিয়ে মিশিয়ে ফেলতে সময় লাগল কয়েক ঘণ্টা মাত্র !
নিমরুদ থেকে প্রাপ্ত 'দু-ডানাওয়ালা সিংহ মূর্তি' গড়া হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব নবম শতকে । গুঁড়িয়ে দিয়েছে সেটাও । মিশরিয় সভ্যতার ওই এক অবস্থা , মরু প্রদেশের চিল শকুনেরাও নাকি গুটিয়ে রাখছে নখর-থাবা । ওদের চেয়েও ভয়ংকর এক জীব তার দাঁত নখ সব নিয়ে শ্মশানে পরিনত করছে সেইসব সোনালি শহরদের । 

টাইগ্রিস বা নীল নদ থেকে থেকে গঙ্গা-যমুনা কত দূর !

এভাবে একদিন ভারতের গৌরবময় নিদর্শনগুলোও এক এক করে মুছে যাবে ধর্মের ধ্বজাধারীদের হাতে । আমরা দেখছি আইএস তার ভারতীয় শাখা খুলছে এদেশে , তালিবান তো সেই কবে থেকে চোরাগোপ্তা পথে এদেশে ঢুকতে শুরু করেছে , এখনো চলেছে ঘাঁটি পাতা । সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে ভারত হবে বৃহত্তম ইসলামিক রাষ্ট্র । তাহলে কোথায় আমাদের নিরাপত্তা ?
কোন জোরে আমরা বলতে পারি আমাদের সাধের তাজমহল, কুতুব মিনার, আগ্রা ফোর্ট , লাল কেল্লা , বুলন্দ দরওয়াজা, ফতেপুরসিক্রি , ঝরোখা -ই- দর্শন, বিবি-কা- মাকবারা , হাওয়া মহল, সোনার কেল্লা , গোলাপী শহর জয়পুর, রাজস্থানের বহু অমূল্য সব কারুকাজ বিশিষ্ট মহলগুলো সুরক্ষিত ?
কিংবা ,
কলকাতার ভিক্টোরিয়া, হাওড়া ব্রীজ, জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি, জোড়া গীর্জা, মাদার হাউজ ,  দক্ষিন ভারতের টুইন্স সিটি হায়দ্রাবাদ-সেকেন্দ্রাবাদ -এর নানা অতুলনীয় দ্রষ্টব্য স্থান, তিরুপতি মন্দির বা কন্যাকুমারিকা থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ভারত মহাসাগরের বুকে দাঁড়ানো বিশাল বিবেক মূর্তি ও মিউজিয়াম খচিত বিবেকানন্দ পয়েণ্ট , বা সুউচ্চ রামানুজ মূর্তি -- এই সব যদি এভাবে হাতুড়ি ছেনির আঘাতে মুছে যায় ভারত সভ্যতা থেকে তাহলে কী নিয়ে মানব সভ্যতা গর্ব বোধ করবে ?

দুনিয়াজুড়ে মৌলবাদের উত্থান আর বিশেষভাবে বললে ইসলামিক মৌলবাদের উত্থান , রাজনৈতিক সমীকরন , আগ্রাসন , যুদ্ধ , ধর্মের অন্ধত্ব , কুসংস্কার , মস্তিস্কের জড়তা এই সব মিলিয়ে তৈরী হয়েছে এমন এক ফাঁস যা চেপে ধরছে সভ্যতার ইতিহাসের কন্ঠ । তৈরী করছে এই অসভ্য ইতিহাসের দলিল , যার শরিক আমরাও

ইতিহাস আমাদের মনে রাখবে এমন এক সময়ের বাসিন্দা হিসেবে , যে সময়ে আমাদের সবার জীবনে অস্থিরতা নিয়ে এসেছিল 'ধর্ম' নামক অলীক এক আদর্শ, 'ঈশ্বর -আল্লা' নামক অদৃশ্য কিছু উপাস্য -বিশ্বাস ও 'জেহাদ' নামক অদম্য এক রক্তের পিপাসা ।
চোখের সামনে আমরা দেখছি মানুষের হাতেই মানুষের তৈরি সভ্যতার ইমারতের ধ্বংস যজ্ঞ । গলার কাছে আটকে থাকা কষ্ট আর নিরবে কান্না ছাড়া, আর কিছুরই প্রকাশ হচ্ছে না




3 comments:

  1. ফ্যান্টাস্টিক হয়েছে ব্লগটা ! এরকম লেখা পড়তেও ভালো লাগে। শুধু ইনফ্রমেটিভই নয়, লেখার ধরণও সুন্দর হয়েছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. thanks a lot. এরম কমেন্ট পেলে আরও লেখার প্রেরনা পাই ।

      Delete
  2. অসাধারণ লেখা! আরও পড়তে চাই।

    ReplyDelete