My Attitude!

My Attitude!

Pages

My Blog List

Meet and Recognise-- I, Me and MySelf...!

@@@ ~WELCOME TO MY CYBER WORLD~ @@@











~~~ I am My Own Music, People Want to Get in Touch With Me... Play Your Lyrics By My Rhythm ~~~



Tuesday, July 7, 2015

নারী , সন্তান ও একটি রায়

গতকাল ভারতীয় উচ্চ আদালতের ঘোষিত একটি ঐতিহাসিক রায়ে ভারতের গণতন্ত্রের উপর একচেটিয়া পুং মালিকানার মরচে একটু ঘষা খেল ।
একটি ব্যক্তিগত মামলার যুগান্তকারী রায়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারতের গোটা নারী সমাজ ।

কি ঘটেছিল ?
এক অবিবাহিতা মহিলা গেজেটেড অফিসার নিজের সন্তানকে একলা মানুষ করার জন্য আদালতে যান , সন্তানের অভিভাবকত্ব চান । কিন্তু নিম্ন আদালত তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল এই বলে যে, " অভিভাবকত্বের দাবী সম্বলিত পিটিশন দাখিলের ক্ষেত্রে বাচ্চার বাবার পরামর্শ আবশ্যক । "
ব্যাখা ছিল ' The guardians and wards Act ' এবং ' Hindu minority and guardianship Act' অনুযায়ী, অভিভাবকত্ব স্থানান্তর করতে গেলে বাবা-মা দুইয়ের অনুমতি লাগবে ।
কিন্তু মহিলা যুক্তি দিলেন , তিনি অবিবাহিত । বাচ্চার বাবার সাথে মাত্র দু'মাস কাটিয়েছেন । বাচ্চা যেমন বাবাকে চেনে না , বাবাও তেমনি বাচ্চার কথা জানে না । তাহলে কিসের অনুমতি?

এর পরেই তিনি গেলেন সুপ্রিম কোর্টে এবং গতকাল পেলেন এক ঐতিহাসিক জয় । যার সুফল কেবল তিনিই নন, ভবিষ্যতে পাবেন আরো অনেক নারী , যারা 'সিঙ্গল পেরেন্ট' হিসেবে দায়িত্ব নিতে সক্ষম এক কচিপ্রানের ।

রাজনৈতিক নেতারা পর্যন্ত এবিষয়ে নিজেদের নোংরা নাক গলাতে ছাড়েন নি । কিন্তু তাদের যুক্তিও সুপ্রিম কোর্ট খন্ডন করেছে এই বলে , " বাবার পরিচয়ের দরকার নেই । সন্তান বেড়ে উঠবে মায়ের একক অভিভাবকত্বেই । "
নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টের রায়ের তীব্র সমালোচনা করেও উচ্চ আদালত জানিয়েছে, " শিশুর উন্নতির দিকটিই সবচেয়ে বেশী নজর দেওয়া উচিৎ ছিল । কিন্তু  যে বাবা সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভুলে যাওয়াকেই বেছে নিয়েছেন , তাকে সন্তানের ভালমন্দের শরিক নাই বা করা হল ।" এর সাথে এও জানিয়েছে,কোনো মহিলাকে সন্তানের পিতৃ পরিচয় প্রকাশ করতে বাধ্য করা যাবে না । একজন আর্থিক -মানসিক সক্ষম মা তাঁর একক অভিভাবকত্বেই স্বাধীনভাবে সন্তানের প্রতিপালন করবেন । 

গত বুধবারও , এরমই আরো একটি যুগান্তকারী সাহসী রায় দিয়েছিল উচ্চ আদালত । বিচারপতি মিশ্র ও পন্থের বিভাগীয় বেঞ্চ একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন , " ধর্ষনের শাস্তি কমিয়ে আনতে ক্ষতিপূরণ বা বিবাহের প্রতিশ্রুতি কোন ভাবেই গ্রাহ্য হতে পারে না । "
আর গতকাল যে রায় বেরোল , তাতে এটারই প্রতিধ্বনী শোনা গেল ," অবিবাহিত মায়েদের ক্ষেত্রে সন্তানের অভিভাবক হতে আর বাধা রইল না । শিশুর বাবার পরিচয় এক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক নয় ।"

সন্তানের কাস্টডী নিয়ে সমাজের নাক উঁচু-র পেছনে আছে দীর্ঘ পুরুষতন্ত্রের জং ধরা নারীবিদ্বেষী নিয়মকানুন এবং নারী স্বাধীনতা ও অধিকারকে দমিয়ে রাখার ইচ্ছে ।

ধর্ষনের বিচারে আজকাল প্রায়ই শোনা যায় 'মেয়ে নষ্ট ' হয়ে গেছে , পেটে বাচ্চা এসেছে । তাই একে বাঁচানোর একমাত্র পথ হল ধর্ষকের সাথেই বিয়ে দেওয়া । এতে মেয়েটির একটা 'বৈধ সামাজিক অভিভাবক' ও বাচ্চাটির একটি 'বৈধ পিতৃ পরিচয় ' জুটবে ।

ধর্ষন করবে পুরুষ , নষ্ট হবে মেয়ে ।
বাচ্চার জন্য বীর্য ঢালবে পুরুষ , নষ্ট হবে মেয়ে ।
বাচ্চা জন্মাবে সেই 'নষ্ট মেয়ে'র পেট থেকে , 'বাবা' হবে পুরুষ ।
আর মা যদি সেই বাচ্চা একা রাখতে চায় , ধর্ষককেই বিয়ে করতে বাধ্য করবে পুরুষতন্ত্র ।

পৃথিবীর যাবতীয় ভোগ-সুখ- অধিকার-নাম -ক্ষমতা - পরিচয়ের একচেটিয়া মালিক পুরুষ । অথচ তার মালিকানা ফলাতে দরকার একটি নারী দেহ-মন-আত্মা । পুং মালিকানায় পুরুষ প্রভুটি যখন খুশি দাসী নারীটিকে যা খুশি নামে ডাকবে , তার পরিচয় দেবে । আর সমাজ সেটাকেই মান্যতা দেবে ।
এই চলে আসছিল ।

এখন ঘটল এক উলোট পুরাণ ।
অথচ এটা ঘটার কথা ছিল অনেক আগে , অন্তত এক দশক আগে তো বটেই । কারণ 'সিঙ্গল পেরেন্টশিপের' দাবী আজকের নয় । কয়েক দশক ধরে মেয়েদের যোগ্যতা ও সাহসিকতার ন্যায্য দাবী এটি ।
একটি মহিলা যখন আর্থিক ভাবে , মানসিকভাবে প্রস্তুত ও সক্ষম , সন্তান ধারণ ও ভরণপোষনের , তখন সমাজ কে তাকে বাধা দেবার ?

আসলে, সমাজ জিনিসটা ধর্মবিশ্বাসের মতই অন্ধ-কালা-বোবা । একেবারেই প্রতিবন্ধী ।
যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে কোন জিনিসকে বিচার করার মত সহনশীলতা বা নমনীয়তা নেই একেবারেই ।
নইলে, যে সমাজে ডাস্টবিনে কুকুর মা পাহারা দেয় মানবশিশুকে , আস্তাকুড়ে ঠাঁই হয় কন্যাভ্রূনের ; সেখানে একজন দায়িত্বশীল সক্ষম মা -কে তার সন্তানের দায়িত্ব নিতে আদালতে চক্কর কাটতে হয় ফী-বছর ?

দেহ যখন নারীর , জরায়ু -গর্ভাশয়ও যখন মায়ের ; তখন সেই মা-ই সিদ্ধান্ত নেবে তার সন্তান পৃথিবীতে আসবে কিনা । যদি আসে তাহলে তার শরীরের পুষ্টিরস দিয়ে যে ভ্রূনকে তিলেতিলে একটা পূর্ণাঙ্গ রূপ তিনি দিয়েছেন সেই প্রাণটির অভিভাবক তথা সর্বময় ঈশ্বর সব হবেন সেই মা । আর কেউ না । কোনো যুক্তিতেই না ।

পুরুষের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় বীর্য ঢেলে । এর পরে কি হল, কি হবে তা নিয়ে মোটেও সে মাথা ঘামায় না । তাহলে, সেই বীর্য থেকে 'মানুষ' হল না 'শুয়োর' হল তা নিয়ে পিতৃত্বের ন্যাকামি থাকার প্রশ্নই ওঠে না ।
সুতরাং নারীরা কোনোভাবেই সন্তানকে বলতে বাধ্য নন, কে তার বাবা ।

প্রশ্ন উঠবেই, বিজ্ঞানসম্মতভাবে যদি গর্ভাশয় ভাড়া দেওয়া একটি সারোগেট মাদার তার পরিচয় গোপন রাখতে পারেন আজীবন , তাহলে বীর্য ভাড়া দেওয়া একটি পুরুষ কেন 'বাবার ' পরিচয় পাবে ?
সারোগেট গরীব মা হয়তো টাকার বিনিময়ে কাজটি করেন , কিন্তু পুরুষ তো টাকার চেয়েও বড় জিনিসের বিনিময়ে লিঙ্গসুখের কাণ্ডটি ঘটায় -- নারীর মাংস-হৃদয় ভক্ষন , মানসম্মানের বলাৎকার দ্বারা।
ডিম্বানুকে নিষীক্ত করতে একটি ফার্টাইল শুক্রানু দরকার যা যে কোন লাইসেন্সপ্রাপ্ত 'স্পার্ম ব্যাঙ্ক' থেকে পাওয়া যায় । তাহলে এক্ষেত্রে সেই ভাড়ার শুক্রানুর মালিককে 'বাবা' বলা যায় কি ?
প্রশ্ন ওঠে ।
প্রশ্ন আরো ওঠে , এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে পাশপোর্ট বানাতে হলে যেখানে বাবার নামধাম-ঠিকুজির দরকার পড়ে না , তাহলে স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে বাচ্চার গার্জিয়ান হিসেবে মায়ের নাম কেন মান্যতা পাবে না ?
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় , এই সকল প্রশ্নের মুখে সপাট উত্তর জুগিয়েছে ।

তবু...
তবু...
আশঙ্কা থেকেই যায় , উচ্চ আদালতের রায় আমাদের এই প্রতিবন্ধী সমাজের 'চুঁইয়ে পড়া' নীতি ফলো করে নিম্নস্তরেও পৌছাবে তো ? লোকাল থানা বা স্থানীয় প্রশাসন অবধি লাগু হবে তো সত্যি ? নাকি এখনো ডাস্টবিনে পিঁপড়ে ছিড়ে খাবে কোনো শিশুকে ? অথবা দত্তক আইনের মারপাচে হন্যে হবে অন্য এক যোগ্য মা ? অথবা স্কুল ফিরিয়ে দেবে 'বাবার নাম জেনে তবে আসুন' এই বলে ?
আমরা আশায় বাঁচতে চাই । তাই ভাবতে চাই এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও আখেরে শিক্ষিত স্বনির্ভর মায়েরা নিশ্চয় ভাষা পাবেন তাদের অভিভাবকত্বের প্রশ্নে ।

দেশে এখন 'বেটি বাঁচাও , বেটি পড়াও ' নামে আন্দোলন শুরু হয়েছে সরকারিভাবেই । ভারতের বহু গ্রাম এখন মহিলা শুন্য । রাজস্থান-গুজরাটে কন্যাভ্রূন হত্যার কুফল হিসেবে  সেখানকার সমাজ  ভুগছে সোনার ছেলেদের বিয়ে -সংসার ইত্যাদি প্রশ্নে । কারণ ওই যে, পুং মালিকানা ফলাতে হলেও তো চাই এক নারী শরীর ।
তাদের নিজেদের কানেই একই প্রশ্ন বাজছে , বেটি নেহি বাঁচাওগে ... তো বহু ( বৌ ) ক্যায়সে পাওগে ?

উচ্চ আদালতের এই রায় হয়তো এই আন্দোলনকে এক অন্য দিশা দেবে , আশা রাখি ।
নারী শিক্ষিত হলে , স্বনির্ভর হলে পুরুষের অপদার্থতাকে লাথি মেরে নিজের একক মাতৃত্বের সংসার গোছাতে পারবে ।
গোছাতে গিয়ে বাধা এলে অন্তত শিক্ষিত মেয়েরা সমাজের লালচোখকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে নিজেদের বুদ্ধি যুক্তি দিয়ে সন্তানকে বুকে নিয়ে পথে তো নামতে পারবে , আর সাথি হিসেবে পাবে সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়কে , আইনের রূপ পেতে যার খুব দেরি হয়তো হবে না ।

এভাবেই ' পড়ে গা ইন্ডিয়া ... তব হি তো বড়ে গা ইন্ডিয়া ' -- আপ্ত বাক্য সফল হবে ।
কারণ, মনীষীরা যুগ যুগ ধরে বলে আসছেন, সেই দেশই প্রকৃত স্বাধীন ও শিক্ষিত... যে দেশের নারী জাতি স্বাধীন ও শিক্ষিত ।

দেশ ও সমাজের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের ন্যায়ের মুকুটে আরো অনেক উজ্জ্বল পালক যুক্ত হোক , এই আশা নিশ্চয় খুব বেশি কিছু চাওয়া নয় ।


Tuesday, May 19, 2015

একটি বিকট বিতর্ক ও কিছু বেয়াড়া বাওয়াল প্রশ্ন :

সলমান খানের শাস্তি , তাঁর ‘বিয়িং হিউম্যান ‘ কাজকর্ম , গায়ক অভিজিতের বিতর্কিত বাইট নিয়ে মিডিয়ায় হেব্বি বাওয়াল হল ।

‘গ্লোরি অফ ডেথ’ অথবা ‘গ্লোরি অফ ফেলিওর’ এই হল মোদ্দা কথা ।
১২৫ কোটির মহান দেশে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যুহার অনেক পুওর (মানে কম । ভুলেও ‘গরিব’ টরিব ভাব্বেন না )।
তবু মৃত্যু এদেশে বিরাট 'বিষয়' ।

বাঁচন্তির ‘পক্ষে’র লোকেরা যে মূহুর্তে চেঁচাবে, 'মদ্যপ ড্রাইভারের ফাঁসি চাই । গরিবের অধিকার বাঁচাও কমিটি গড় । রাস্তা কি বড়লোকের বাপের ?'

অমনি, বাঁচন্তির ‘বিপক্ষে’র লোকেরা সওয়াল করবে ‘ ন্যালাগুলো বেকায়দায় ঘুমাবে , গাড়ি এলে সরে যেতে পারবে না , ফিটনেস নেই , কিন্তু দুচার পিস টেঁসে গেলে শালা পাতাখোড়ও ট্যাগ খাবে সুপ্রিম শহিদ !’

কথা হল , গাড়ি মদ খেয়ে চালানো বেআইনী ঠিকই , ফুটপাতে গাড়ি তুলে দেওয়া আরো বে আইনি । গাড়ির উপর নিয়ন্ত্রন না থাকা ও ফুটপাতবাসিকে খুন করা ( হোক না তা অনিচ্ছাকৃত) সওয়ারির অবশ্যই ফাঁসি হওয়া উচিৎ । 
সব বুঝলাম ।

কিন্তু বলুন তো, ফুটপাত জুড়ে শুয়ে থাকা কোন ধারায় আইন সম্মত ?

গাড়ির তলায় এসে পড়া লোকজন সব সময় গাড়ির মালিককে টার্গেট করে । রোড অ্যাক্সিডেন্টে যে ক’টা  পিস আদমি শাস্তি পায়, সব ড্রাইভার । একটাও পথচারী নয় । ট্রাফিকের সতর্কতা, মোবাইলে সতর্কতা কিছুই পথচারীরা বা পথবাসীরা শুনবেন না ।

কেন ?
কারন ,                                                         
‘যব তক সুরজ চাঁদ রহেগা / রাস্তে পে আপনা ঘর রহেগা !’

আমরা, আম জনতা যেমন খুশি রাস্তাকে ব্যবহার করব , হাঁটব ,দৌড়াবো, মদ্যপ অবস্থায় মাপব, খাব, হাগব , মুতব, শোব , গড়াগড়ি খাব কিন্তু কোনো গাড়িওয়ালা যদি নিশানায় বেখেয়ালে এসে যায় তাইলে শালার হিউম্যান রাইটকে এমন যমের দুয়ারে পাঠাবো যে জীবনে লোকে তাকে 'হিউম্যান' ডাকবে না , হনুমান ডাকবে !

National Crime Record Bureau  অনুযায়ী ২০১৩ সালে গড়ে প্রতিদিন ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পথ দূর্ঘটনায় । রোজ আহত হচ্ছেন ১২৮৭ জন । এত এত দূর্ঘটনা , এত এত মৃত্যু সব কী স্রেফ ড্রাইভারের দোষ ? বুক ঠুকে বলুক তো ফুটপাতের আম-নাগরিক !

একথা ঠিক যে, বেশীর ভাগই ড্রাইভারের দোষ । কিন্তু সড়ক দূর্ঘটনা মানেই যে ড্রাইভার ভিলেন এটা কি খুব সত্য ?

সরকারি খতিয়ান বলছে , ২০১১ সালে ভারতে যত পথ দূর্ঘটনা হয়েছিল তার মধ্যে ২২.৫% ক্ষেত্রে ড্রাইভারের দোষ ছিল না । দোষ ছিল পথচারীর বেপরোয়া মন , যান্ত্রিক গোলোযোগ , খারাপ রাস্তা , খারাপ আবহাওয়া ইত্যাদি অনেক কিছু ।

আর এটা তো সত্য , পথ দূর্ঘটনা পথেই ঘটবে । বেডরুমে নিশ্চয় নয় । কাজেই পথের মধ্যে বা ধারে রয়েছেন যিনি সচেতন থাকাটা তারও আশু কর্তব্য নয় কি ? নাকি ঘুমে অচেতন থাকা বা ফুটপাতকেই হকের বিছানা ধরে গড়াগড়ি খাওয়াটা খুব ন্যায় সঙ্গত ?

রাস্তা বা ফুটপাথ যেমন বড়লোকের বাপের সম্পত্তি নয় , তেমনি গরিবের গত জন্মদিনেও কোনো চ্যারিটি হোম তাদের সেটা গিফট করেনি ।

কলকাতার বহু ফুটপাতে হাঁটার অবস্থা নেই ।
মধ্যবিত্তের ট্যাক্স দিয়ে বানানো শহরের চলাচলের জায়গা আজ বেআইনিভাবে বেহাত হয়েছে । অন্য এক কলকাতা ঘুমায় সেখানে প্রতিদিন প্রতিরাত । কেন ? এই ফুটপাতে হাঁটার অধিকার আমাদের নেই ? মনে রাখবেন , ফুটপাত দিয়ে না হাঁটাও কিন্তু দূর্ঘটনার কারন । ফুটপাতে ঘর-বাঁধা, পথকে আরও দূর্ঘটনাপ্রবন বানিয়েছে ।
পথে হাঁটা মানুষের ঝুঁকি বাড়ছে , পথের পাশে বসবাসকারীদের জীবন বিপন্ন করছে । এই দখলদারি কি বেআইনি নয় ?

রাস্তা ছাপিয়ে ফুটপাত দখলকারি ঝোপাড়-মহল্লাকে যদি সমর্থন দিতে হয়, তাহলে ফুটপাতে উদ্ধত দাঁড়িয়ে থাকা বেআইনি হকারদের অবস্থানকেও খুলে আম সমর্থন দিতে হবে । এই হকাররাও ত পেটের টানেই ফুটপাতে বসেন । তবে কলকাতার হাতিবাগান , গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট, বড় বাজার অথবা অন্য নানা ছোট শহরগুলোর বেদখল হয়ে যাওয়া ফুটপাত নিয়ে হা-হুতাশ কেন শহুরে মধ্যবিত্তের ?

এবার অনেক বুদ্ধিজীবি হাঁ হাঁ চেঁচাবেন , ফুটপাত কি কেউ শখ করে বেছে নেয় ? গরিবের সাধ আছে সাধ্য নেই । তাইবলে বাঁচার অধিকার নেই ? অ্যাঁ !

না , কথা একদম তা না । খুব সত্য কথা কয়েছেন তেনারা ।

এবার একটু ভাবুন তো,  দূর্ঘটনায় পা-হারানো আব্দুল্লা রউফ শেখ তো কাজ করতেন আমেরিকান এক্সপ্রেস বেকারিতে । তাহলে বেকারির কর্মচারিকে কেন বেকারির সামনের ফুটপাতেই রাত গুজরান করতে হয় ? সে দায় তো তারাও এড়াতে পারেন না । রাতে খোলা আকাশের নীচে শুয়ে যাদের প্রান গেল গাড়ির চাকার তলায় তাদের সুরক্ষার দায় অবশ্যই রাষ্ট্রের ছিল । ছিল না কি ?

রোটি কাপড়া আউর মাকান --- এই তিন কিন্তু আমাদের মৌলিক অধিকার , সংবিধান সম্মত ভাবে ।

যে দেশ তার নাগরিকের মাথার উপর ছাদ দিতে পারে না , তার আইনই যদি সেই নাগরিকের মৃত্যুর বিচার চালায় তাকেই বা কতদূর নিরপেক্ষ বলা যায়? প্রশ্ন থেকেই যায় ।

প্রশ্ন আরো জমে , যদি সালমান দোষি হন , শাস্তি পান , তাহলে মুম্বাই কর্পোরেশন কি একই দায়ে দুষ্ট নয় ?
দায় কি এড়াতে পারে শহরের পৌরপিতা থেকে ৬৮ বছরের স্বাধীন ভারত , স্বয়ং ?

আবার এটাও ঠিক , এর আগে বহুবার নানা চাপে পড়ে ফুটপাত বাঁচানো ও দূর্ঘটনা এড়াতে সরকার নানা শহরে বস্তিবাসীদের জন্য নয়া আবাস গড়ে দিয়েছিল , হকারদের জন্য আলাদা হকারস মার্কেটও গড়েছিল ।
কিন্তু কেউ ওই আবাসে থাকেন নি বা ওই ছিমছাম দোকানে পসরা সাজান নি । ভাড়া দিয়েছেন মোটা টাকা আদায়ের জন্য আর নিজেরা ফিরে গেছেন শখের ফুটপাতে । এগুলো দোষের না ? বেআইনি না ?

‘নবান্ন’ নাটকে বিজন ভট্টাচার্য্য বুভুক্ষু মানুষ আর কুকুর এর সহাবস্থান দেখিয়েছিলেন  একই ডাস্টবিনের সামনে । ক্ষুধার যন্ত্রনা হয়তো চেহারা পাল্টেছে কিন্তু মানুষ আর কুকুরের ফারাকটা সেদিনও যা ছিল আজও তাই । কিন্তু এই সত্য আমরা মেনে নিতে পারি নি ।

‘পথের পাঁচালী’ হোক , ‘স্লাম ডগ মিলিয়নিয়ার’ হোক , ভারত কিন্তু বিশ্বের বাজারে ‘গরিবি’ বেচেই অস্কার জেতে ।
তাই গায়ক অভিজিতের ওই ‘কুত্তা কা মউত’ নামক বিতর্কিত ওয়ান লাইনার নিয়ে যতই বাওয়াল হোক না কেন, আমরা কিন্তু ঘুমিয়ে রয়েছি মহান ভারতের ফুটপাতেই ।
সে তুমি যতই ভিভিআইপি হও না কেন !

মোদ্দা কথা হল , ফুটপাথ সঙ্গমে  ভারত আজও বিশ্বে একমবাদ্বিতীয়ম !  


Thursday, May 14, 2015

ইসলামিক সন্ত্রাসে শুধু মানুষ নয় , বিপন্ন সভ্যতার ইতিহাসও .

ধর্মের ক্লেদ আর মিথ্যে বেহেস্তিয় সুখের জিগির তুলে একের পর এক ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে যে জাতি তারা মুসলমান বা আরো স্পষ্ট করলে ইসলামীয় সন্ত্রাসী । মানুষ মারা, মুন্ড নিয়ে ফুটবল খেলা জাত আজ এই গলা কাটা বিনোদনে ক্লান্ত হয়তো । তাই এবার তারা ইতিহাসকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর ।

জওহরলাল নেহেরু তাঁর Discovery of India বইয়ে লিখেছিলেন , "ভারতে ও তার বাইরে এমন স্থান খুব কমই আছে যেখানে এর পুরাতন স্মৃতিসৌধ , ভারতীয় সংস্কৃতি বিশেষত বৌদ্ধ যুগের এত চিহ্ন দেখা যায় - যেমন মেলে আফগানিস্থানে ।" 
সৈয়দ মুজতবা আলী লিখেছিলেন " যেদিন বৃহত্তর দৃষ্টি দিয়ে দেখতে শিখব সেদিন জানব যে ভারতবর্ষ ও আফগানিস্থানকে পৃথক করে দেখা পরবর্তি যুগের কুসংস্কার ।"

যে ভারতে মিশে আছে কনিষ্ক-এর বুদ্ধ স্তুপ , আমির খসরু- রুমি , বাবর, গান্ধারী এরা সবাই বিনাকাঁটা তারেই এসেছিলেন সে দেশে ।
যে কনিষ্ক ভারত শাসন করেছিলেন সেই একই জন আফগানিস্তানেও করেছিলেন । বাবর যেমন ওই দেশের তেমনি ভারতেরও । ইতিহাসের যৎসামান্য সন্মানপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে একজন গান্ধারীও নাকি এসেছিলেন হিন্দুকুশ পর্বত পেরিয়েই ।
প্রথম শতাব্দীতে বৃহৎ ভারতের বহু ধর্মপ্রচারক চীন- তীব্বত- মধ্য এশিয়া হয়ে আগফানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বতমালায় যে পথে বেনিয়ারা পশরা সাজিয়ে চীন থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত বানিজ্য করতে যেতেন, সেই ঐতিহাসিক পথের ধারে বৌদ্ধ সাধুরা পাথর কেটে তৈরী করেছিলেন অসংখ্য গুম্ফা , পরে যেগুলি হয়ে উঠেছিল,  ধর্ম- দর্শন-শিল্পকলার চর্চাকেন্দ্র ।
বৌদ্ধ মঠ- গুম্ফা - শিলালীপি - মুদ্রা তথা অসংখ্য পুরাকীর্তির আকরভূমি হল এই আফগানিস্তান । কুষান আমলে বামিয়ানে তৈরী 'বামিয়ান বৌদ্ধমূর্তি' ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম বৌদ্ধ মূর্তি । যা অন্যতম World Heritage site হিসেবে ঘোষনা করেছিল UNESCO .
এছাড়াও আছে ...
টাইগ্রিস নদীর তীরে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন ছিল আসিরীয় সভ্যতা । মানুষের সভ্যতার উষাকাল থেকে উজ্জ্বল হয়ে ছিল আসিরিয় সভ্যতা । আসিরিয়ার রাজধানী নিমরুদের ধ্বংস স্তুপ থেকে বহু চেষ্টায় পুরাতাত্ত্বিকরা উদ্ধার করেছিলেন সেই সময় কালের মূর্তি- ভাস্কর্য- লিপি । যা মানুষের সুপ্রাচীন ইতিহাসের নিরব দলিল ।

সেইসব সভ্যতার আকরভূমি , মানুষের সুপ্রাচীন ইতিহাসের দলিলগুলির ধারক দেশগুলি আজ জ্বলছে । ধর্মের অন্ধকূপের আগুনে জ্বলতে জ্বলতে একটু একটু করে ছাই হয়ে মিশে যাচ্ছে আইসিস - তালিবান অধ্যুসিত আজকের ধুসর আকাশে ।
যে আফগানিস্থানকে ছোটবেলায় চিনেছিলাম রবী ঠাকুরের 'কাবুলিওয়ালা'-র হাত ধরে ,সেই মরুভূমির আখরোট -বাদাম-পেস্তার গন্ধ মাখা দেশ আজ বারুদের গন্ধ আর মানুষের রক্তের গন্ধে দূষিত । টাইগ্রিস -ব্যবিলন-মসুল- আসিরীয়া -নিমরুদ এসব স্থানে এখন রাত্রীচারী জংগিদের অবাধ স্বাধীনতা ।

গজনীর সুলতান মামুদ যিনি সতেরোবার ভারত আক্রমণ করে সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করে 'আইকনক্লাস্ট ' উপাধি পেয়ে কুখ্যাত হয়েছিলেন মানব সভ্যতার ইতিহাসে, তিনিও বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তির গায়ে আঁচড় কাটার চেষ্টা করেন নি । কিন্তু তলিবানরা, পৃথিবীর অহংকার সেই সুউচ্চ মূর্তিকে গুঁড়িয়ে দিয়ে প্রমান করেছিল জেহাদের সঙ্গে সভ্যতা- সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নেই । একবিংশ  শতকে তাদের যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবে উঠে এসেছে আইসিস  (ইসলামিক স্টেট ) ।

টাইগ্রিসের তীরে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার নিদর্শনগুলি ধ্বংস করেছে । মাত্র কয়েক ঘণ্টার হাতুড়ি-শাবল -ছেনির আঘাতে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে নিমরুদের অমূল্য সব স্থাপত্য, মূর্তি , লিপি । পৃথিবী থেকে মুছে ফেলেছে খ্রীষ্টের জন্মের তেরোশো বছর আগের আসিরীয় নিদর্শন । হাতুরির ঘায়ে ধুলিস্যাৎ হয়েছে মসুলের জাদুঘর ।
ফেসবুক পেজে ইরাকের পর্যটন ও স্থাপত্য - প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্রকের আর্তনাদ ছাড়া আর কি বা অবশিষ্ট আছে ?

নিনেভের জাদুঘর ধ্বংসের ভিডিও আইএস ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে - প্রচার শাখা আল-হায়াত
আমরা দেখেছি হাজার হাজার বছরের ইতিহাস মূহুর্তে মাটিতে মিশছে হাতুড়ির আঘাতে । জঙ্গিদের বার্তা " পৈত্তলিকতা মুছতে এই হামলা !"
রাষ্ট্র সঙ্ঘ তীব্র নিন্দা করে বার্তা দিয়েছে , কড়া সমালোচনা করেছে আরো কিছু হিউম্যানিস্ট অরগ্যানাইজেশন । কিন্তু এতে থামে নি ওদের ধ্বংস যজ্ঞ ।

কত সব মূর্তি , ভাস্কর্য, যেগুলি তৈরী করতে মানুষের চেষ্টার ইতিহাস ছিল কয়েক শতাব্দী জুড়ে , সেগুলি মাটিয়ে মিশিয়ে ফেলতে সময় লাগল কয়েক ঘণ্টা মাত্র !
নিমরুদ থেকে প্রাপ্ত 'দু-ডানাওয়ালা সিংহ মূর্তি' গড়া হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব নবম শতকে । গুঁড়িয়ে দিয়েছে সেটাও । মিশরিয় সভ্যতার ওই এক অবস্থা , মরু প্রদেশের চিল শকুনেরাও নাকি গুটিয়ে রাখছে নখর-থাবা । ওদের চেয়েও ভয়ংকর এক জীব তার দাঁত নখ সব নিয়ে শ্মশানে পরিনত করছে সেইসব সোনালি শহরদের । 

টাইগ্রিস বা নীল নদ থেকে থেকে গঙ্গা-যমুনা কত দূর !

এভাবে একদিন ভারতের গৌরবময় নিদর্শনগুলোও এক এক করে মুছে যাবে ধর্মের ধ্বজাধারীদের হাতে । আমরা দেখছি আইএস তার ভারতীয় শাখা খুলছে এদেশে , তালিবান তো সেই কবে থেকে চোরাগোপ্তা পথে এদেশে ঢুকতে শুরু করেছে , এখনো চলেছে ঘাঁটি পাতা । সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে ভারত হবে বৃহত্তম ইসলামিক রাষ্ট্র । তাহলে কোথায় আমাদের নিরাপত্তা ?
কোন জোরে আমরা বলতে পারি আমাদের সাধের তাজমহল, কুতুব মিনার, আগ্রা ফোর্ট , লাল কেল্লা , বুলন্দ দরওয়াজা, ফতেপুরসিক্রি , ঝরোখা -ই- দর্শন, বিবি-কা- মাকবারা , হাওয়া মহল, সোনার কেল্লা , গোলাপী শহর জয়পুর, রাজস্থানের বহু অমূল্য সব কারুকাজ বিশিষ্ট মহলগুলো সুরক্ষিত ?
কিংবা ,
কলকাতার ভিক্টোরিয়া, হাওড়া ব্রীজ, জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি, জোড়া গীর্জা, মাদার হাউজ ,  দক্ষিন ভারতের টুইন্স সিটি হায়দ্রাবাদ-সেকেন্দ্রাবাদ -এর নানা অতুলনীয় দ্রষ্টব্য স্থান, তিরুপতি মন্দির বা কন্যাকুমারিকা থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ভারত মহাসাগরের বুকে দাঁড়ানো বিশাল বিবেক মূর্তি ও মিউজিয়াম খচিত বিবেকানন্দ পয়েণ্ট , বা সুউচ্চ রামানুজ মূর্তি -- এই সব যদি এভাবে হাতুড়ি ছেনির আঘাতে মুছে যায় ভারত সভ্যতা থেকে তাহলে কী নিয়ে মানব সভ্যতা গর্ব বোধ করবে ?

দুনিয়াজুড়ে মৌলবাদের উত্থান আর বিশেষভাবে বললে ইসলামিক মৌলবাদের উত্থান , রাজনৈতিক সমীকরন , আগ্রাসন , যুদ্ধ , ধর্মের অন্ধত্ব , কুসংস্কার , মস্তিস্কের জড়তা এই সব মিলিয়ে তৈরী হয়েছে এমন এক ফাঁস যা চেপে ধরছে সভ্যতার ইতিহাসের কন্ঠ । তৈরী করছে এই অসভ্য ইতিহাসের দলিল , যার শরিক আমরাও

ইতিহাস আমাদের মনে রাখবে এমন এক সময়ের বাসিন্দা হিসেবে , যে সময়ে আমাদের সবার জীবনে অস্থিরতা নিয়ে এসেছিল 'ধর্ম' নামক অলীক এক আদর্শ, 'ঈশ্বর -আল্লা' নামক অদৃশ্য কিছু উপাস্য -বিশ্বাস ও 'জেহাদ' নামক অদম্য এক রক্তের পিপাসা ।
চোখের সামনে আমরা দেখছি মানুষের হাতেই মানুষের তৈরি সভ্যতার ইমারতের ধ্বংস যজ্ঞ । গলার কাছে আটকে থাকা কষ্ট আর নিরবে কান্না ছাড়া, আর কিছুরই প্রকাশ হচ্ছে না




Tuesday, April 21, 2015

আমার কলেজ- হোস্টেল জীবনের সেই সব উদ্দাম দিন

তখন ২০০৪-২০০৫ সাল ।
উচ্চ মাধ্যমিকে জেলাস্তরে প্রথম দশের মধ্যে স্ট্যান্ড করার পরে মফস্বল জীবনের ইতি , হুস করে চকচকে শহর কলকাতায় পড়তে আসা । অনেক কলেজে অ্যাডমিশন টেস্ট শেষে সরকারি পশ কলেজ - 'মৌলানা আজাদ কলেজ' এ ইংরেজী অনার্স নিয়ে ভর্তি হলাম। কিন্তু থাকার জায়গার বেশ অভাব অনুভূত হল, বিশেষত অচেনা শহরে একা এক মেয়ের জন্য ।
শেষে, উচ্চ মাধ্যমিকের নাম্বার দেখে মেরিট লিস্ট অনুযায়ী পার্ক সার্কাসে 'মুসলিম গার্লস হোস্টেল' নামে ওয়াকফ বোর্ডের আয়ত্তাধীন শুধুমাত্র মুসলিম মেয়েদের জন্য ২০০ জনের নিরাপদ বাসস্থান একটি হোস্টেলে তিন বছরের জন্য থাকা-খাওয়ার আশ্রয় জুটল । বাবা-মা হাঁপ ছেড়ে বাঁচল । আমিও ।
কলেজ জীবনটা কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরেই আমার কাছে আকর্ষণীয় ছিল বরাবর । কারন ওই কলেজ ছিল বোরখা-ঢাকা , হিন্দীভাষীদের মুক্তাঞ্চল আর নয়তো পশ 'ক্যালকেশিয়ান'দের (মানে যারা 'আমি লোরেটো'র জিনিয়াস / 'আমি এ.জি.চার্চের ব্রাইট ব্রেইন!' এরম কথাবার্তাকেই 'কালচার' ভাবত ) নাক উঁচু আঁতলামি দেখানোর জায়গা ।
আমার মত মফস্বলীয়ানদের সেটা ভালো না লাগার অনেক কারণ ছিল ।
ভালো লাগার জায়গা ছিল আমার হোস্টেলটা ।
সত্যি, জীবনে যে একবারও হোস্টেলে থাকেনি তার জীবনের ১২ আনাই মাটি ! নিজেকে এক্সপ্লোর করার শ্রেষ্ঠ স্থান হল হোস্টেল জীবন । কত শত সুপ্ত প্রতিভা যে বিকশিত হয় এই জীবনে , তা যে যাপন করেনি এই জীবন, সে জানবেই না সারাজীবনেও ।
আমাদের হোস্টেল জীবনের অনেক অ্যাডভেঞ্চার করেছিলাম । সেরমই একটা ঘটনা নিয়ে আজকের লেখা ।
বয়স তখন ১৯-২০ । সাল ২০০৫ । অনার্সের পার্ট ১ পরীক্ষা হয়ে গেছে ।
এই সময় আমাদের হোস্টেলের অ্যানুয়াল ফাংসান হয় প্রতিবছর । সেবারেও এই উদ্দেশ্যে আমরা মোট ২০০ জন ১০০/- টাকা করে চাঁদা দিয়েছিলাম । কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারনে আমাদের হোস্টেল সুপার ঘোষনা দিলেন 'এ বছর আর ফাংসান হবে না ।'
কি ব্যাপার ?
-- "কোন কারন,তা ঠিক জানা নেই, ওটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত ।"
[ ওয়াকফ বোর্ড হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার পোষিত একটি ট্রাস্টি বোর্ড , যা এরাজ্যে বেশিরভাগ মুসলিম এস্টেটগুলোর একছত্র মালিক , প্রচুর অনুদান আসে এই বোর্ডে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে গরীব-পিছিয়ে পড়া মুসলিম জনগণের মানোন্নয়নের জন্য , এবং বলাইবাহুল্য সেই টাকা পেটে ঢোকে বোর্ডের মুসলিম মেম্বারদের, মানে টাকার কুমিরদের ।]
তো যাই হোক, আমরা দাবি তুললাম , সেই টাকা তাহলে আমাদের ফেরত দেওয়া হোক , যখন অনুষ্ঠানটাই হবে না ।
সুপার বললেন - 'না । টাকা ফেরত হবে না ।'
আমাদের হোস্টেলের দুজন প্রধান অথারিটি ছিলেন - ১) সুপার , ২) মেট্রন ।
সুপার হতে গেলে সেই মহিলাকে যেকোনো কলেজের প্রফেসর হতে হত ।
অন্তত পক্ষে ২ বছরের কর্মঅভিজ্ঞতা থাকতে হত ।
যে ঘরে সুপার থাকবেন সেখানে তার মেয়ে ছাড়া অন্যকোনো পুরুষ ফ্যামিলি মেম্বার নিষিদ্ধ ছিল ।
তাঁকে মেস কমিটির অর্থাৎ যারা সারামাস মেস (ছাত্রীদের ঠিকঠাক খাওয়ার দ্বায়িত্বপালন - খরচের হিসেব- মেনু-তদারকি ইত্যাদি) চালাবে তার সুপারভাইজ করতে হত টাকা পয়সা ইত্যাদি টোটাল কালেকশন থেকে দিয়ে ।
আমরা বোর্ডাররা মাসে একটা Amount টাকা গচ্ছিত রাখতাম থাকা-খাওয়া বাবদ । সেই টাকা সুপার বের করে মেস কমিটির হাতে দেবেন ঠিকমত মেস চালাবার জন্য ।
হোস্টেলের খাবার কেমন - তা যারা থেকেছে তারা জানে ।
ডালের পরিমান বাড়ানোর জন্য ভাতের মাড় মেশানো ,
বা, মাছের টুকরো বাড়ানোর জন্য ব্লেড দিয়ে ৪ কেজি মাছের ১৫০ টা পিস বের করা ,
বা, সব্জিতে সবুজ কিছু নেই শুধুই আলু এবং
ভাতে সাদার চেয়ে কালো কাঁকড়ের চেহারা বেশি দেখা যাওয়াই স্বাভাবিক --এই হল হোস্টেলের রোজকার মেনু ।
সাথে ফ্রীতে থাকত, রান্নার চাচীদের গালিগালাজ , ওদের মুখে কিছুই বাঁধত না ।
আমাদেরই টাকায় খেয়ে ফুলে ঢোল চেহারা তাদের । আমাদের তিনজনের খাবার ওরা এক একজন খেত ! এই নিয়ে অভিযোগের শেষ ছিল না ।
আমরা এই নিয়ে চেঁচাতাম , থালা ছুঁড়ে মারতাম , খিদের চোটে লাইনে দাঁড়িয়ে বাটি বাজাতাম !
মোট কথা, আমরা এসব নিয়েই বেশ খুশিতেই থাকতাম ।
বাধ সাধল সুপারের ওই ঘোষনা ।
অনেক অবেদন নিবেদন করেও যখন কাজ হল না , তখন কয়েকজনের পরামর্শে আমি এক রাতে সুপারের অফিসের মাথায় একটা নোটিস টাঙ্গিয়ে এলাম যাতে লেখা ছিল --
'হোস্টেলের সবার পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে অবিলম্বে আমাদের টাকা ফেরত দিন , নইলে আমরা বোর্ডের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হব ।'
প্রসঙ্গত জানাই , অ্যাপ্লিকেশন লেখা বা যে কোনো ফরম্যাল চিঠি চাপাটি লেখাতে আমার ডাক পড়ত , সেই ছোট থেকেই এক কেস !
তো সকালে এই নোটিস পড়ে সুপার খচে বোম !
বেছে বেছে আমাদের ক'জনের লোকাল গার্ডিয়ানদের ফোন করে বললেন, ''আপনার মেয়ের নামে চার্জশীট তৈরী হচ্ছে । ওদের নামে অনেক অভিযোগ । আসুন , কথা বলুন । ওদের শিঘ্রই হোস্টেল থেকে তাড়ানো হবে ।"
খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার বাবা খেপে গেলেন । অন্য অনেকের অভিভাবকরা চিন্তিত হলেন ।
সবাই এক কথা -- "টাকা কি কম পড়েছে ? মাত্র ১০০ টাকার জন্য আন্দোলন ? লিখিতভাবে সুপারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও , উনি ঠিক মেনে নেবেন ।"
এবারে আমাদের মাথা গরম হল ।
আমরা দলে ছিলাম ৫-৭ জন । যাদের নামে চার্জশীট ইত্যাদি । আমার নাম সবার উপরে ।
বাড়িতে জানালাম , "কিছুতেই আমরা সুপারের অন্যায় দাবীর কাছে মাথা নোয়াবো না । তাতে যা হয় হবে । "
--- "তাহলে বাড়ি আসবে না । নিজের ব্যবস্থা নিজেই করবে ।" বাবা বলে দিলেন , ফোন কেটে গেল ।
খোঁজ নিতে শুরু করলাম , সুপারের এই ঔদ্ধত্বের জবাব দেব কিভাবে ?
বন্ধুরা খোঁজ নিয়ে জানল , সুপারের ভ্যালিডিটি শেষ হয়েছে একমাস আগেই । এবার নতুন সুপার আসার কথা । কিন্তু তিনি পদ আটকে বসে আছেন , ক্ষমতা ও থাকা-খাওয়ার সুবিধের লোভে , যা নিয়ম বিরুদ্ধ ।
আরো জানা গেল , ওনার সাথে ওনার স্বামীও একই হোস্টেল ঘরে থাকেন , যা নিয়ম বিরুদ্ধ ।
পাশাপাশি আরো খোঁজ পাওয়া গেল উনি কোনো কলেজের প্রফেসরই নন, সামান্য এক প্রাইভেট প্রাইমারি স্কুলের টেম্পোরারি টিচার, যা নিয়ম বিরুদ্ধ !
এই করে করে আমরা গোপনে অনেক তথ্য সংগ্রহ করলাম যা সুপারের বিরুদ্ধে যায় ।
এবার,
আমাদের একমাত্র দাবী হয়ে উঠল -- " টাকা নয় । এই কোরাপ্ট সুপারের অপসারণ চাই । নতুন সুপারের নিয়োগ চাই ।"
মে মাস এসে গেল , চাঁদি ফাটা গরমে এক সোমবার সকালে আমরা ৮ জনের দল গেলাম কলকাতার ওয়াকফ বোর্ডের মেইন অফিসে । সেখানে চেয়ারম্যান দেখা করলেন না । বেয়ারা মারফত জানলাম চার্জশীটের ব্যাপার ওনারা কিছু জানেন না । একরকম কুকুরের খেঁদানোর মত তাড়িয়ে দেওয়া হল আমাদের ।
পরের দিন , আমরা ঠিক করলাম ওয়াকফ বোর্ড না , এবার আমাদের গন্তব্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রীর চেম্বার অর্থাৎ মহাকরণ ( Writers Building ) অভিযান । যেমন কথা তেমন কাজ ।
পরের দিন গেলাম মহাকরণ । লাল বাড়ির গেটের সিকিউরিটিরা একসাথে ১০ জন মেয়ে দেখে বেশ ঘাবড়ে গেলেন ।
তিন চার জন এসে বললেন, 'এভাবে সবাইকে তো ঢুকতে দেওয়া হবে না । পারমিশন নিয়ে আসুন । ৩ জনকে Allow করতে পারি ।'
আমাদের এক বন্ধুর মামা রাইটার্সে আমলা ছিলেন । পারমিশন এসে গেল । আমি , একজন উর্দুভাষী দিদি ও আরো একজন বন্ধু মিলে গেলাম মন্ত্রী রাজ্জাক মোল্লার সাথে দেখা করতে, কিন্তু উনি না থাকায় আনিসুর রহমানের চেম্বারে গেলাম। উনার অফিসের এক আমলা পই পই করে বারণ করলেন মিডিয়াকে কিছু জানাবে না কিন্তু !
আমরা অভিযোগ যথাযম্ভব বিস্তারিতভাবে বলে গেলাম ও ওয়াকফ বোর্ডের অন্যায় ব্যবহারও বাদ দিলাম না ।
উনি বললেন - ''ঠিক আছে , দেখছি ।''
বুঝে গেলাম ,এভাবে কাজ হবে না ।
এরপর শুরু হল, মিডিয়ার সাথে অ্যাপো !
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কিছু টিচারের আত্মীয় ছিলেন সাংবাদিক । অনুনয় বিনয় করে তাদের কাছে বার্তা পৌঁছালো আমার কিছু বন্ধু।
এদিকে আমি কলেজের পথে দেখতাম পার্ক স্ট্রীটে 'স্টার আনন্দে'র ট্যাবলো আর ওবি ভ্যান দাঁড়ানো ।
একদিন সটান গিয়ে ওদের চ্যানেলে সব জানালাম ।
এই করে 'আজকাল' ,'সংবাদ প্রতিদিন', 'বর্তমান', 'টেলিগ্রাফ' , 'টাইমস' ও সব শেষে 'আনন্দবাজার' জানল । মিডিয়া লুফে নিল পুরো ব্যাপারটা আর মেয়েদের এই লড়াকু অবস্থানকে পুরো সমর্থন দিয়ে পাশে দাঁড়াবার আশ্বাস দিল ।
আমরা নেক্সট অ্যাজেন্ডা স্থির করতে শুরু করলাম । না, কোনো অভিজ্ঞতা , অভিজ্ঞ মাথা আমাদের ছিল না । বিনা গাইডলাইনেই চলছিলাম আমরা । উদ্দেশ্য পরিস্কার ছিল , আর ছিল বুক ভরা সাহস।
যদি হোস্টেল থেকে তাড়িয়ে দেয় ,বাবাও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়, কোথায় যাব ?কিভাবে পড়ব ? আর কেনই বা ছাড়ব মেরিট বেসিসে পাওয়া হোস্টেল ? -- এই চিন্তায় সবাই মরছি ।
তখন মন্ত্রী, আমলা, নেতা , মাথা কাউকেই ডরাই না , এমন মনোভাব ।
পরের দিন, এক সিনিয়র বল্লেন, এভাবে হবে না । আমাদের ডেডলাইন দিতে হবে সরকারপক্ষকে । বোর্ডের কাছে লিখিত দেওয়া হোক , এক কপি মহাকরণেও পাঠানো হোক । আমাদের দাবি না মানলে শুরু হবে অবস্থান বিক্ষোভ , তাতেও না হলে অনশন করব ।
যেই কথা সেই কাজ ।
পরের দিন আবার বোর্ড , এবারে লিখিত দাবি । তাই ফেরাতে পারল না ওরা । শুনল এবং চলে যেতে বলল । বেরিয়ে এসেই মহাকরণ । মন্ত্রী তখন দিল্লীতে । সুতরাং আবার অপেক্ষা ও এবার খোদ শিক্ষা মন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ । আমলারা বুঝল ব্যাপার গুরুতর । মুখ্যমন্ত্রীর চেম্বারের যাওয়ার আগেই অন্যরা থামিয়ে দিয়ে সব লিখিত আবেদন জমা নিলেন ও আমরা বেরোবার আগে বলে গেলাম ---
"৭ দিন সময় । এর মধ্যে যদি কাজ না হয় , অনশনে বসব ।"
একই মেসেজ ওয়াকফের কাছেও গেল । ওদের সামনে বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ এল । বুঝল, মহাকরণ অবধি যখন এই কাণ্ড গেছে , তখন মিডিয়া নিশ্চয় জেনে গেছে এবং তাদের সাপোর্টও নিশ্চয় আমাদের আছে। ফলত ১০০ টাকার সামান্য সমস্যা, যেটা দিয়ে শুরু হল কাণ্ড , সেটা থেকে এবারে ওয়াকফের কোটি টাকার ঘাপলা ধরা পড়ে যাবে ।
এ যেন কেঁচো খুড়তে কেউটে !
ওয়াকফ বোর্ড প্রমাদ গুনল । বলল-- " না, তোমাদের কারুর নামে কোনো অভিযোগ আমাদের নেই । কোনো চার্জশীট তৈরী হচ্ছে না , হবেও না । তোমরা এইসব না করে মন দিয়ে পড়াশুনা কর।"
অনেক বুঝিয়েও যখন আমাদের একগুঁয়ে মনোভাব থেকে নড়াতে পারল না, তখন হাল ছেড়ে দিল ।
আমরা সোম থেকে শনিবার অবধি টাইম বেঁধে দিলাম । যা মিটিং করার করুন । সুপারের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমান আছে । ওকে না সরালে হোস্টেল অচল থাকবে অনির্দিষ্ট কাল।
আমাদের সহপাঠিরা , হোস্টেলমেটরা অনেকেই ভয় পেয়ে , আমাদের গালি দিয়ে হোস্টেল থেকে কিছুদিনের লীভ নিয়ে বাড়ি চলে গেল । ঝামেলা মিটলে ফিরবে এই বাসনায় ।
আমরা থোড়াই কেয়ার করি !
এই একসপ্তাহে আমরা আঁকতে শুরু করলাম নানান কার্টুন , প্ল্যাকার্ড , স্লোগান , পোস্টার এবং আরো নানা কিছু ... হ্যাঁ আঁকার দ্বায়িত্বে আমিই ছিলাম , স্লোগান বাঁধতেও সেই আমি ও আমার রুমমেট !
না, কোনো কাজ হল না । বোর্ড থেকে লোক এসে চলে গেল কিন্তু সুরাহা হল না । সুপার আসা-যাওয়া করতেই থাকলেন, সাথে চলল হুমকি । রাস্তায় ছেলে ফিট করার কথাও শুনতে পেলাম । ভয় যে পাইনি , এমন নয় । কিন্তু এতোটা এগিয়ে কিছুতেই পিছু হঠা যায় না ।
শনিবার রাতে হোস্টেলে মিটিং হল । যারা থাকতে চায় না আন্দোলনে তাদের চলে যেতে বলা হল , এবং সকালে প্রতি রুমে তালা মারার ব্যবস্থা হল ।
এসে গেল রবিবার । আমাদের ডেড-এন্ড ।
সকাল ৬ টায় পোস্টার - প্ল্যাকার্ড - কার্টুন ইত্যাদি হোস্টেল গেটের বাইরের দেওয়ালে আটকে শুরু হল ৩৫ জনের অবস্থান ।
স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হল দীলখুশা স্ট্রিটের চৌরাস্তা , গলি ।
মিডিয়া আসতে শুরু করল বেলা গড়াতেই । সুপার ভয়ে পেছনের গেট দিয়ে পালিয়ে গেল । খবর গেল বোর্ডে , রাইটার্সেও ।
অবস্থান তখন অনশনের পথে ।
বেলা গড়াতেই আমাদের বন্ধুরা একে একে অসুস্থ হতে লাগল । ওদের নিয়ে যাওয়া হল নিকটবর্তী 'ইসলামিয়া হসপিটালে' ।
ভালো ছিলাম না আমরা কেউই ।
এরমধ্যে দুজন মিলে লিফলেট জেরক্স করে হ্যান্ডবিল আকারে রাস্তায় বিলোতে শুরু করেছি ।
ভীড় বাড়ছিল । একগাড়ি পুলিশ না জানি কি করে বা কেন এসে উপস্থিত ! না, টিয়ার গ্যাসের দরকার পড়ে নি ।
দুপুর গড়াতেই একে একে চার গাড়ি আমলা , মন্ত্রী এবং বোর্ড মেম্বাররা এসে উপস্থিত হল ।
সব শুনলেন আবার । 'অন-স্পট অ্যাকশনের' দাবীতে আবারো মুখরিত হল হোস্টেল চত্ত্বর ।
ডিজিটাল মিডীয়া ততক্ষনে আমাদের আঁকা কার্টুন আর পোস্টার সব টিভীতে দেখাচ্ছে 'লাইভ ' !

দিকে আমাদের শরীর সত্যি আর দিচ্ছিলো না ।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামতেই সুপার যেই ফিরলেন, তক্ষুনী তার ঘর সীল করে নোটিশ ধরিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হল । তার সাথে আমাদের দাবী মত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও শুরু হচ্ছে বলে জানিয়ে দেওয়া হল । অফিসারেরা রাতে গাড়িতে চড়ে বিদায় নিলেন ।
আমরা জল -বিস্কুট খেয়ে পার্টি দিলাম ! ঘুমিয়েই পড়লাম ধরতে গেলে ।
সেদিনের পরেও দীর্ঘদিন মিডিয়ার নানা বন্ধুরা যোগাযোগ রেখেছিলেন আমার সাথে , আমার বন্ধুদের সাথেও ।
এই একটা ঘটনা আমাদের এক লাফে অনেকটা বড় করে দিল । বন্ধুরূপী মানুষের মুখ আর মুখোশের আড়াল থাকল না ।
তবে হ্যাঁ ভালোর মধ্যে, আমাদের মেট্রন ,যিনি ছাত্রী দরদী ছিলেন, তিনি প্রমোশান পেয়ে অস্থায়ী সুপারের চার্জ নিলেন । সাথে আমাদের সমীহও করতে শুরু করলেন ।
রান্নার চাচিদের দৌরাত্ম কিছুটা কমে গেল ।
আর আমরা ...হঠাৎ সিনিয়র হয়ে গেলাম অনেকের কাছে !
২০০৬ এ আমাদের শেষদিন অবধি এই এক ঘটনা ওয়াকফ হোস্টেলের ইতিহাসে অলিখিত কিন্তু স্মরনীয় হয়ে থাকল ।
২০০৫ এর আগে এরম কিছু ঘটেনি , এখন ২০১৫ ; এত কাল পরেও কিছুই ঘটল না । তা বলে কি সব ঠিকঠাক চলছে ? নাহ , আসলে সেদিনের প্রতিবাদী মুখগুলো হয়তো পালটে গেছে, এখন নেইও কেউ হ্যাঁ কে 'হ্যাঁ' আর না কে 'না' বলার ।
মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে আমাদের আনাড়ি আন্দোলনের 'শুরুয়াত' তো হল , তাৎক্ষনিক সুরাহাও হল । কিন্তু মূল ঘাপলার শেষ হল না । ঘাপলার কেচ্ছায় কলঙ্কিত হয়ে থাকল ওয়াকফ বোর্ড ! এই নিয়ে বুদ্ধিজীবিদের বাইট দেখানো হল টিভিতে , অনেক আঁতলামি চলল । ওয়াকফ ট্রাস্ট থাকল ওয়াকফেই।
আমরা পেরিয়ে গেলাম অনেকটা দীর্ঘ পথ । বড় হয়ে গেলাম দ্রুত ।


Thursday, April 9, 2015

হাদিস-কোরান মাদ্রাসাশিক্ষা (বুঝে) : শিশুমস্তিষ্কে অবাধ প্রবেশ যৌনতা, অ্যাডাল্টারি ও মাদক সেবনের মত 'গ্যান' : সহি ইসলামি শিক্ষা !

আমাদের উপমহাদেশিয় রাষ্ট্রে মানে ভারত ও বাংলাদেশে কওমী / খারিজি মাদ্রাসা গুলোয় শিশু বয়স থেকেই ছেলে ও মেয়েদের (ঋতুস্রাব না হওয়া অব্ধি) আরবী শিক্ষা , কোরান শিক্ষা ইত্যাদি দান করা মুসমানীয় রীতি অনুযায়ি ফরজ (বাধ্যতামূলক / আবশ্যক) । 

মানে আল্ল্যাফাক তাই কয়েছেন তার আকাশ থেকে টপকানো কেতাবে ।
এখন কেতাবওয়ালা তো কেতাব লিখে খালাস । এবার যারা পড়বে তারা বুয়ে নিক ,বুয়ে পড়তে গিয়ে তাদের ইমানদণ্ডের টনটনানি আরও বাড়ুক ,সেখান থেকে আরামদন্ডের সুড়সুড়ানি বাড়ুক আর তাব্লীগরা (মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা) হস্তমৈথুনের সাথে সাথে মনেমনে সাত আসমান জুড়ে রেপের স্বাদ নিক !

এই অব্ধি পড়ে যারা অস্তাগফিরুল্লা জপছেন তাদের বমি ওঠার আগেই আসুন দেখা যাক কেন এত্ত বড় অ্যালিগেশন সহি ইসলামের সাদা জোব্বার গায়ে !

বাচ্চারা, প্রাপ্তবয়সে পৌছানোর আগেই, যদি নিজের মাতৃভাষায় মাদ্রাসার মৌলবির কাছে ধর্ম শিক্ষা নেয় তাহলে সহি ইসলামি কেতাবের পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা জুড়ে অন্য অনেক কিছুর সাথে আরও কি কি সওয়াব (পূন্যার্জন করা) শিখবে , দেখা যাক ।
--------------------------------------------------------

১)
 প্রশ্ন : - কুরআন ও হাদীসের আলোকে রুমে কেবল স্বামী স্ত্রী থাকলে শরীরে কোন কাপড় না রেখে কি ঘুমানো যায়? 

উঃ - লজ্জাস্থান অপ্রয়োজনে খুলে রাখা বৈধ নয়। পর্দার ভেতরে প্রয়োজনে তা খুলে রাখায় দোষ নেই। যেমন মিলনের সময়, গোসলের সময় বা প্রস্রাব পায়খানার করার সময়। অপ্রয়োজনের সময় লজ্জাস্থান আবৃত রাখা ওয়াজেব।
নবি (সঃ) বলেছেন, “তুমি তোমার স্ত্রী ও ক্রীতদাসী ছাড়া অন্যের নিকট লজ্জাস্থানের হেফাজত কর।”
সাহাবী বললেন, ‘হে আল্লাহ্র রাসুল! লোকেরা আপসে এক জায়গায় থাকলে?’
তিনি বললেন, “যথাসাধ্য চেষ্টা করবে, কেউ যেন তা মোটেই দেখতে না পায়।”
সাহাবী বললেন, ‘ হে আল্লহর রাসুল! কেউ যদি নির্জনে থাকে?’
তিনি বললেন, “মানুষ অপেক্ষা আল্লাহ এর বেশী হকদার যে, তাকে লজ্জা করা হবে।” ৬১৪ (আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মিশকাত ৩১১৭ নং)

২)
 প্রশ্ন :-- শুনেছি, সহবাসের সময় সম্পূর্ণ উলঙ্গ হতে নেই, রুম অন্ধকার রাখতে হয়, একে অপরের লজ্জাস্থান দেখতে নেই ইত্যাদি। তা কি ঠিক?
  
উঃ -- এ হল লজ্জাশীলতার পরিচয়। পরন্ত শরীয়তে তা হারাম নয়। অর্থাৎ রুম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে এবং সেখানে স্বামী স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ না থাকলে আর পর্দার প্রয়োজন নেই। স্বামী স্ত্রী একে অন্যের লেবাস। উভয়ে উভয়ের সব কিছু দেখতে পারে।
মহান আল্লাহ বলেছেন,“সফল মুমিন তারা, যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে। নিজেদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসী ব্যাতিত।
সুতরাং কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী। (মু’মিনূনঃ ৫-৬, মাআরিজঃ ২৯-৩১)

৩) 

প্রশ্ন :--  কোন কোন সময় স্ত্রী সহবাস নিসিদ্ধ? শুনেছি অমবস্যা ও পূর্ণিমার রাত্রিতে সহবাস করতে হয় না ? এ কথা কি ঠিক?
   উঃ -- দিবারাত্রে স্বামী স্ত্রীর যখন সুযোগ হয়, তখনই সহবাস বৈধ। তবে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত কয়েকটি নিষিদ্ধ সময় আছে, যাতে স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ নয়।

১। স্ত্রীর মাসিক অথবা প্রসবোত্তর খুন থাকা অবস্থায়। মহান আল্লাহ বলেছেন, “লোকে রাজঃস্রাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। তুমি বল, তা অশুচি। সুতরাং তোমরা রাজঃস্রাবকালে স্ত্রীসঙ্গ বর্জন কর এবং যতদিন না তারা পবিত্র হয়, (সহবাসের জন্য) তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হয়, তখন তাদের নিকট ঠিক সেইভাবে গমন কর, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাপ্রার্থীগণকে এবং যারা পবিত্র থাকে, তাঁদেরকে পছন্দ করেন।” (বাকারাহঃ ২২২)

রাসুল (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি তার ঋতুমতী স্ত্রী (মাসিক অবস্থায়) সঙ্গম করে অথবা কোন স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে সহবাস করে, অথবা কোন গনকের নিকট উপস্থিত হয়ে (সে যা বলে তা) বিশ্বাস করে, সে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সঃ) এর অবতীর্ণ কুরআনের সাথে কুফরী করে।” (অর্থাৎ কুরআনকে সে অবিশ্বাস ও অমান্য করে। কারণ, কুরআনে এ সব কুকর্মকে নিসিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।) (আহমাদ ২/৪০৮, ৪৭৬, তিরমিযী, সহীহ ইবনে মাজাহ ৫২২ নং)

২। রমযানের দিনের বেলায় রোযা অবস্থায়। মহান আল্লাহ বলেছেন, “রোযার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক।” (বাকারাহঃ ১৮৭) আর বিদিত যে, রমযানের রোযা অবস্থায় সঙ্গম করলে যথারীতি তার কাফফারা আছে। একটানা দুইমাস রোযা রাখতে হবে, নচেৎ অক্ষম হলে ষাট জন মিসকীন খাওয়াতে হবে।

৩। হজ্জ বা উমরার ইহরাম অবস্থায়। মহান আল্লাহ বলেন, “সুবিদিত মাসে (যথাঃ শাওয়াল, যিলক্বদ ও যিলহজ্জে) হজ্জ হয়। যে কেউ এই মাস গুলোতে হজ্জ করার সংকল্প করে, সে যেন হজ্জ এর সময় স্ত্রী সহবাস (কোন প্রকার যৌনাচার), পাপ কাজ এবং ঝগড়া বিবাদ না করে।” (বাকারাহঃ ১৯৭)
এ ছাড়া অন্য সময়ে দিবারাত্রির যে কোন অংশে সহবাস বৈধ। (মুহাম্মাদ স্বালেহ আল-মুনাজ্জিদ)হাদিসে এসেছে, “যদি তোমরা কেউ স্ত্রী সহবাসের ইচ্ছা করে, তখন দুআ পড়ে, তাহলে তাঁদের ভাগ্যে সন্তান এলে, শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারে না।” (বুখারী-মুসলিম)

৪) 
প্রশ্ন :-- শরীয়তে সমমৈথুন প্রসঙ্গে বিধান কি?

উঃ --  সমমৈথুনঃ পুরুষ সঙ্গম বা পুরুষ-পুরুষে পায়ুপথে কুকর্ম করাকে বলে। আর এরই অনুরূপ স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করাও। 
মহান আলাহ বলেন,“ মানুষের মধ্যে তোমরা তো কেবল পুরুষদের সাথেই উপগত হও। ” (সূরা শূআরা ১৬৫ আয়াত) তিনি আরও বলেন, “তোমরা তো কাম তৃপ্তির জন্য নারী ত্যাগ করে পুরুষদের নিকট গমন কর!” (সূরা আ’রাফ ৮১ আয়াত) 
আল্লাহ তাঁদেরকে এই কুকাজের শাস্তি স্বরূপ তাঁদের ঘর বাড়ী উল্টে দিয়েছিলেন এবং আকাশ থেকে তাঁদের উপর বর্ষণ করেছিলেন পাথর। তিনি বলেন,“অতঃপর যখন আমার আদেশ এল তখন আমি (তাঁদের নগরগুলোকে) ঊর্ধ্বভাগকে নিম্নভাগে পরিণত করেছিলাম এবং আমি তাঁদের উপর ক্রমগত কঙ্কর বর্ষণ করেছিলাম।” (সূরা হিজর ৭৪ )

৫) 
প্রশ্ন:--হস্ত মৈথুন যুবক যুবতী কারোর জন্যও বৈধ নয়। কিন্তু যদি স্বামী স্ত্রী একে অপরের হস্ত দ্বারা মৈথুন করে, তাহলেও কি তা অবৈধ হবে?

উঃ -- স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে এমন মৈথুন অবৈধ নয়। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন, “সফল মু’মিন তারা, যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে। নিজেদের পত্নি অথবা অধিকারভুক্ত দাসী ব্যাতীত; এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। সুতরাং কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালঙ্ঘকারী।” (মু’মিনূনঃ ৫-৭, মাআরিজঃ ২৯-৩১)
সুতরাং অবৈধ হল নিজের হাতে নিজের বীর্যপাত। স্বামী স্ত্রীর একে অন্যের হাত দ্বারা বীর্যপাত অবৈধ নয়।
মহানবী (সঃ) ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে যৌনাচার করার ব্যপারে বলেছেন, “সঙ্গম ছাড়া সব কিছু কর।” (মুসলিম ৩০২ নং)

৬) 
ইসলামে যৌন চাহিদা পূরণের জন্য বিবাহের প্রতি ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।

হাদীসে আছে, "যে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ে করার সামর্থ আছে তাদের উচিৎ বিয়ে করা, এটি দৃষ্টিকে নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাযত করে । (বুখারী, মুসলিম)

৭)
হস্তমৈথুন প্রসঙ্গে হাদিস বলছে ---
ইসলাম কেবল স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে যৌনসঙ্গম অনুমোদন করে। হস্তমৈথুন বা স্বকাম তাই ইসলামে অনুমোদিত নয়। ইবনে কাসীর সহ বেশ কিছু হাদীসগ্রন্থের হাদীসে হস্তমৈথুনকারীকে অভিশপ্ত এবং হস্তমৈথূনকে স্বীয় হস্তের সাথে ব্যভিচার বলা হয়েছে।
এছাড়াও হাদীসে বলা হয়েছে, হস্তমৈথুনকারীকে আল্লাহ জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন, কিন্তু যারা অনুশোচনা ও তওবা করবে আল্লাহ শুধু তাদেরকেই ক্ষমা করবেন। 

৮) 
ব্লোজব / মুখমৈথুন প্রসঙ্গে ---
ইসলামে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মুখমৈথুনের ব্যপারে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয় নি। সে কারণে অনেক আলেমই এটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ কিংবা বৈধতা প্রদান করা থেকে বিরত থেকেছেন। আবার অনেক আলেম এটিকে মাকরুহ বলে স্বাব্যস্ত করেছেন।

৯) 
এছাড়াও কোরানে আছে , "তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে তোমাদের মাতা, কন্যা , ভগিনী, ফুফু, খালা, ভাতুস্পুত্রী, ভাগিনেয়, দুধ-মা, দুধ-বোন, শ্বাশুড়ি ও তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সহবাস হয়েছে তার পূর্ব স্বামির ঔরসজাত কন্যা । তবে যদি তাদের মায়ের সাথে সেই স্বামীর সহবাস না হয়ে থাকে তবে তোমাদের সঙ্গমে বৈধতা আছে ।" ( সুরা নিসা , ৪ঃ২৩)

১০) 
যৌনতা ছাড়াও অন্যান্য যেসব নেশার কথা বেশ লোভনীয় ভাবে কোরানে বর্নিত হয়েছে তা হল---
" সাবধানিদের (বিশ্বাসী , মুমিন) জন্য আছে সাফল্য, উদ্যান , দ্রাক্ষা , সমবয়স্কা উদ্ভিন্ন যৌবনা তরুনী এবং পূর্ণ পানপাত্র ।" (সুরা 'নাবা' ২ঃ৩১ )

*** মুসলমানরা খুব গর্বিত যে কোরান তাদের মদ খাওয়া / নেশা করা থেকে বিরত রেখেছে । তাদের জন্য মাদক সেবন হারাম করেছে । তারা কি আদৌ কোরান পড়েছে ? পড়লে কি এই জান্নাত চ্যাপ্টার মাথায় ঢোকে নি ?

১১)
"যার মাধ্যমে আল্লাহ তা’লা দ্বীন ইসলামকে বুলন্দ এবং সুউচ্চ করেছেন তা হলো আল্লাহর পথে জিহাদ। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর বাণীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে জিহাদ করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘‘আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর দায়িত্ব নিয়েছেন যে ব্যক্তি শুধুমাত্র আল্লাহর পথে জিহাদ করা এবং তাঁর কথাকে সত্য বলে প্রমাণিত করার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়। অথবা তাকে জিহাদের সাওয়াব ও গণীমত লাভে ধন্য করে গাজী হিসাবে ঘরে ফিরিয়ে আনেন’’। [বুখারী ও মুসলিম]


------------------------------------------------------------------------------
একটু বড় হয়ে গেল লেখাটা । কিন্তু কেতাবওয়ালার সওয়াবি 'গ্যান' কি আর অতটুকু সময়ে মেলে ? এট্টূ ধৈর্য্য তো লাগবেই, খোদা কসম !

ইনশাল্লা, এবারে নিশ্চয় বুয়েছেন কি দারুণ সব প্রাপ্ত বয়স্ক শিক্ষা আছে ধর্ম কেতাবে !
কে বলে, লেখা পড়া না করলে 'বড় ' হওয়া যায় না ?
আবালের কথায় কান দেবেন না ।

আপনার বাচ্চাকে তাড়াতাড়ি 'বড় ' করতে হলে নিশ্চয় মাদ্রাসায় পাঠাবেন হাদিস শরিফ, কোরান সহ । সেখানে তার মওলানা (শিক্ষক) ও সহপাঠিদের সাথে এই নিয়ে প্রবল বিশ্বাসে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালিনই বাচ্চা দ্রুত ৮ থেকে ১৮ তে পৌছে যাবে ।

বেকার কিছু আবাল শিক্ষিত পাব্লিক 'চাউমিন'কে দায়ী করে বাচ্চাদের রক্তে দ্রুত অ্যাডাল্ট হরমোন ঢোকানোর নামে দুয়ো দেয় ।
আসল চাউমিন তো এখানে, আপনি খান, সন্তানদেরও খেতে উদবুদ্ধ করুন । সহি ইসলামি শিক্ষা ... ইয়াম্মি !!